মুযনিবীন নাইম: [২] বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও শিক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে রোববার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবিও জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনটি।

[৩] রোববার দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়।

[৪] এ সময় নেতাকর্মীদের “মৌলবাদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন”, “শিবিরের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন”, “জায়ামাত-শিবির-রাজাকার, তাড়াতাড়ি বাংলা ছাড়”, “শিবিরে আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

[৫] বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে রাব্বির সিট ফেরত দিতে বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র সংগঠনটি। 

[৬] রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

[৭] সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের এক ভাই ৭ মার্চের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা দিবসের প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন। যার কারণে তার হলের সিট কেঁড়ে নেওয়া হয়। আমরা বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ভাই রাব্বির সিট ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই। অন্যথায় যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হবে, তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের দাবি, বুয়েট ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হবে।

[৮] বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ বুয়েট প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে একটি অন্যায্য, অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত শিক্ষাবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

[৯] সমাবেশে  আরও বলা হয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও এই রাষ্ট্রে সাধারণের শিক্ষার অধিকার একটি গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিয়েছে এ দেশের ছাত্রসমাজ। 

[১০] মূলধারার প্রকাশ্য ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে বুয়েটকে দেশ ও বিশ্ব মানবতাবিরোধী, নিষিদ্ধ, অন্ধকার জগতের বিভিন্ন সংগঠনের  কর্মকাণ্ড পরিচালনার তীর্থস্থানে পরিণত করা হয়েছে।

[১১] এরপর বুয়েট ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানসহ অন্যান্যরা। রোববার ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিকাল ৩টার দিকে প্রায় কয়েকশ নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা। পরে বুয়েট ত্যাগ করেন তারা। 

[১২] সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমবেত হন। সম্পাদনা: ইকবাল খান